‘বৃক্ষ রোপণ করে যে, সম্পদশালী হয় সে’ এবং ‘স্বাস্থ্য পুষ্টি অর্থ চাই, দেশি ফলের গাছ লাগাই’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাঙ্গামাটি জেলায় সাত দিন ব্যাপি বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা/২০১৭ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসন, বন বিভাগ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার আয়োজনে গত ০৩ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ মানজারুল মান্নানের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদেও মাননীয় মহিলা সংসদ সদস্য বেগম ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ প্রনব ভট্টাচার্য্য, রাঙ্গামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো: রকিবুল ইসলাম মুকুল, পুলিশ সুপার সাইদ তারিকুল হাসান। অনুষ্ঠানের শুরুতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে পৌরসভা চত্তর থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেলা চত্বরে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশগ্রহন করেন।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: তৌফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ প্রনব ভট্টাচার্য্য বলেন বর্তমান সরকারের বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপের ফলে কৃষির পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। কৃষকদের দেশি ফল বাগান স্থাপনে উৎসাহ দানের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক মোবাইল এ্যাপস, ওয়েব পোর্টাল, কৃষি কল সেন্টার ইত্যাদির মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি রোপিত চারা কলমের সঠিক পরিচর্যার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, একটি ফলদ গাছ সন্তানের ন্যায় বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মাকে আর্থিক সহায়তায় সাহায্য করে। বর্তমান সরকারের বিশেষ উদ্যোগে বৃক্ষ রোপনের বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে অধিক হারে বৃক্ষ রোপন করা হচ্ছে। তিান নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় বাগান সৃজনের পাশাপাশি শহর এলাকায় ছাদ বাগান সম্প্রসারণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধান অতিথি দীপংকর তালুকদার তার বক্তব্যে বলেন বৃক্ষরোপন অভিযান কোন ক্ষুদ্র পরিসরের বিষয় নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য বৃক্ষরোপন অভিযান এশটি গুরুতাবপূর্ন বিষয়। নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংস করার ফলে বর্তমানে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ দেখা দিচ্ছে, যার বিরুপ প্রভাব পড়ছে আর্থসামাজিক জীবনে। তিনি বলেন পাহাড়ে ব্যপক হারে সামাজিক বনায়নের কার্যক্রম শুরুর পাশাপাশি উদ্যানতাত্ত্বিক ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করা দরকার। এলাকার সাধারন মানুষের অংশগ্রহন ছাড়া বৃক্ষরোপন অভিযান পুরোপুরি সফল হতে পারে না। তিনি এ লক্ষে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে সকলকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। মেলায় বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও নার্সারী প্রতিষ্ঠান ফলজ, বনজ, ঔষধি ও শোভাবর্ধণকারী গাছের স্টল স্থাপন করে এবং চারা/কলম বিক্রয় করে। মেলা উপলক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাদ্র-ছাত্রীদের মাঝে বিনা মূল্যে বিভিন্ন গাছের চারা/কলম বিতরণ করা হয়।